পদার্থবিদ্যায় নোবেল: কোয়ান্টাম এবং টানেলিং
Meta: পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার ২০২৩: কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং যান্ত্রিক টানেলিং আবিষ্কারের জন্য তিন বিজ্ঞানীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানুন।
ভূমিকা
পদার্থবিদ্যায় ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার কোয়ান্টাম মেকানিক্সের জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই বছর, তিন জন বিজ্ঞানী - পিয়ের অ্যাগোস্টিনি, ফেরেঙ্ক ক্রাউস এবং অ্যান ল'হুইলিয়ার - পদার্থের মধ্যে ইলেকট্রন গতিবিদ্যার গবেষণায় তাদের অবদানের জন্য সম্মানিত হয়েছেন। তাদের কাজ কোয়ান্টাম জগতের জটিল প্রক্রিয়াগুলো বুঝতে আমাদের সাহায্য করেছে, বিশেষ করে অ্যাটোসেকেন্ড পালস ব্যবহার করে ইলেকট্রনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার ক্ষেত্রে। এই পুরস্কার কোয়ান্টাম মেকানিক্সের মৌলিক নীতি এবং আধুনিক প্রযুক্তিতে এর প্রয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে।
এই তিন বিজ্ঞানীর গবেষণা আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও প্রভাব ফেলে। অ্যাটোসেকেন্ড পালস ব্যবহার করে নতুন প্রজন্মের ইলেকট্রনিক্স, রোগ নির্ণয় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নতি আনা সম্ভব। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের এই অগ্রগতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভবিষ্যৎকে নতুন পথে চালিত করবে। এই প্রবন্ধে আমরা নোবেল বিজয়ীদের কাজ, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের মূল ধারণা এবং এর প্রয়োগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কোয়ান্টাম মেকানিক্সের মূল ধারণা
কোয়ান্টাম মেকানিক্স আধুনিক পদার্থবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা, যা পরমাণু এবং উপ-পারমাণবিক কণার আচরণ ব্যাখ্যা করে। এই তত্ত্ব গত শতাব্দীর শুরুতে বিকশিত হয়েছিল এবং এটি চিরায়ত পদার্থবিদ্যার ধারণার সাথে সাংঘর্ষিক। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের মূল ধারণা হল শক্তি এবং অন্যান্য ভৌত রাশিগুলো অবিচ্ছিন্ন নয়, বরং নির্দিষ্ট পরিমাণে বিদ্যমান থাকে, যাকে কোয়ান্টা বলা হয়। এই ধারণাটি আমাদের বাস্তব জগতকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করে দিয়েছে।
কোয়ান্টাম তত্ত্বের ভিত্তি
কোয়ান্টাম তত্ত্বের ভিত্তি কয়েকটি মৌলিক ধারণার উপর স্থাপিত। এর মধ্যে অন্যতম হল কণা-তরঙ্গ দ্বৈততা, যা অনুসারে কণা (যেমন ইলেকট্রন) একই সাথে তরঙ্গ এবং কণা উভয় রূপে আচরণ করতে পারে। এই ধারণাটি চিরায়ত পদার্থবিদ্যার সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক, যেখানে বস্তু হয় কণা হবে, না হয় তরঙ্গ। কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুসারে, কোনো কণার অবস্থান এবং ভরবেগ একই সাথে নিখুঁতভাবে জানা সম্ভব নয়। এটি হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি নামে পরিচিত। এই নীতি অনুসারে, একটি রাশির পরিমাপ যত নিখুঁতভাবে করা হবে, অন্যটির পরিমাপের অনিশ্চয়তা তত বাড়বে।
কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হল কোয়ান্টাম টানেলিং। এই ঘটনায়, একটি কণা কোনো শক্তি barrier ভেদ করে যেতে পারে, যা চিরায়ত পদার্থবিদ্যা অনুসারে অসম্ভব। এই প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা, যেমন নিউক্লিয়ার ফিউশন এবং রাসায়নিক বিক্রিয়া, ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়। কোয়ান্টাম মেকানিক্স কেবল একটি তাত্ত্বিক কাঠামো নয়, বরং এর অনেক বাস্তব প্রয়োগ রয়েছে। এটি লেজার, ট্রানজিস্টর, এবং ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (MRI) এর মতো আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করেছে।
কোয়ান্টাম সুপারপজিশন এবং এনট্যাঙ্গলমেন্ট
কোয়ান্টাম সুপারপজিশন এবং এনট্যাঙ্গলমেন্ট হল কোয়ান্টাম মেকানিক্সের দুটি জটিল ধারণা, যা এই জগতকে চিরায়ত পদার্থবিদ্যা থেকে আলাদা করে। সুপারপজিশন অনুসারে, একটি কোয়ান্টাম সিস্টেম একই সময়ে একাধিক অবস্থায় থাকতে পারে। যতক্ষণ না এটি পরিমাপ করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এর অবস্থা অনির্দিষ্ট থাকে। একটি সাধারণ উদাহরণ হল একটি মুদ্রা, যা ঘোরানোর সময় যতক্ষণ না মাটিতে পড়ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত হেডস এবং টেলস উভয় অবস্থাতেই আছে বলা যায়। পরিমাপ করার পরেই এর একটি নির্দিষ্ট অবস্থা নির্ধারিত হয়।
অন্যদিকে, কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট হল দুটি কণার মধ্যে একটি বিশেষ সম্পর্ক, যেখানে একটি কণার অবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে অন্যটিকে প্রভাবিত করে, এমনকি যদি তারা অনেক দূরে থাকে। আইনস্টাইন এই ঘটনাকে